বিয়ের পর শ্বশুরবাড়িতে এসে উঠছেন নববধূরা। কিন্তু কয়েক দিন পরেই সুখী দাম্পত্য ছেড়ে- ঘর ছেড়ে বাপের বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন নতুন বৌরা। ভারতের উত্তরপ্রদেশের কয়েকটি গ্রামে একের পর এক এমন ঘটনার জন্ম হয়েছে। খবর জানতে পেরে আশপাশের গ্রামে, ফলে আর কোনো মেয়ে বিয়েই করতে চাইছেন না এইসব গ্রামে। চিরকুমার থেকে যাচ্ছেন যুবকরা।
উত্তরপ্রদেশ হরদোই জেলার অহিরোরি ব্লকের কয়েকটি গ্রামে এমন ঘটনা ঘটেছে। এর কারণ হচ্ছে, মাছির উতপাত। সম্প্রতি এখানকার বাধিয়ানপুরা গ্রাম থেকে অন্তত ছ’জন স্ত্রী শ্বশুরবাড়ির ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কারণ একটিই, মাছির উপদ্রব। এই মাছির জ্বালায় তারা এতটাই তিতিবিরক্ত যে, নতুন বিয়ে হওয়া স্বামী অনুরোধ করলেও তারা আর ফিরতে নারাজ। এমনকি কেউ কেউ বলেছেন, যদি সম্পর্ক ভাঙে, তা-ও সই! কিন্তু তারা আর ঐমাছির জ্বালাতন সহ্য করতে পারবেন না।
বাধিয়ানপুরার আশপাশের বেশ কয়েকটি গ্রামেরও অবস্থা একই। কুইয়ান, পাত্তি, দাহি, সালেমপুর, ফতেপুর, ঝালপুরা, দেওরিয়া, একঘরা– এই সব গ্রামেই চারদিকে এত মাছির উপদ্রব, আর সে কথা এতটাই ছড়িয়েছে যে, দূরদূরান্ত থেকেও চট করে কেউ বিয়ের সম্বন্ধ নিয়ে আসে না। আবার যদি বা আসে, তা-ও কোনও না কোনও ভাবে ভেস্তে যায়।
গ্রামবাসীরা জানাচ্ছেন, ধর্মেন্দ্র নামের এক ব্যক্তির বোনের বিয়ের দেখাশোনা চলছিল। বাড়িতে আসা অতিথিদের মিষ্টি দেওয়ামাত্র এমন ভাবে মাছি ভনভনিয়ে এল, দেখেশুনে বিয়ে বাতিল করে দিয়েই চলে গেলেন তারা। এমনকি অজয় ভার্মা নামের এক ব্যক্তির বিয়ে চলাকালীন মাছির উপদ্রবে মাঝপথে বিয়ে ভেঙেছে বলেও শোনা গিয়েছে।
কোথা থেকে এল এত মাছি: জানা গেছে, ২০১৪ সালে এলাকায় চালু হয়েছিল একটি পোলট্রি ফার্ম। তারপর থেকেই গ্রামজুড়ে বাড়তে থাকে মাছির সংখ্যা। শেষ তিন বছরে তা রীতিমতো অসহ্য জায়গায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে। হাজার হাজার মাছির জ্বালায় ঘর-সংসার ভেঙে যাচ্ছে লোকজনের। এই বছর তো কোনো বিয়েই হয়নি গ্রামে। এই নিয়ে গ্রামের বাসিন্দাদেরও ক্ষোভের অন্ত নেই। সমস্যার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন গ্রামপ্রধান বিকাশ কুমারও। কিন্তু সমাধান খুঁজে পায়নি কেউ। রক্ষা একটাই, এখনো কোনো অসুখ-বিসুখ সেভাবে ছড়িয়ে পড়েনি গ্রামগুলোতে।